Dhaka ০৩:১০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

১০০ বছর পরও আরেকজন বেগম রোকেয়া সৃষ্টি করতে পারিনি : প্রধান উপদেষ্টা

  • ডেস্ক নিউজ
  • Update Time : ০৪:০৪:২৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৯ ডিসেম্বর ২০২৫
  • 10

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, এক শতাব্দী পরও বেগম রোকেয়ার মতো আরেকজন নেতৃস্থানীয় নারী চিন্তাবিদ তৈরি করতে না পারা জাতির দুর্ভাগ্য। তিনি বলেন, রোকেয়া যে স্বপ্ন ও দিকনির্দেশনা দিয়ে গেছেন, তা বাস্তবে রূপ দিতে সমাজ এখনও সক্ষম হয়নি।

মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বেগম রোকেয়া দিবস ২০২৫ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, রোকেয়ার জন্মবার্ষিকীর আয়োজন শুধু স্মরণ নয়, আমাদের ব্যর্থতা খুঁজে বের করার সুযোগ। কেন শত বছরেও রোকেয়ার মতো আরও কেউ সমাজকে ঝাঁকুনি দিয়ে জাগিয়ে তুলতে পারেনি, সেটি ভাবার সময় এসেছে।

তিনি ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষের কথা স্মরণ করে বলেন, সেই সময় নারীরা সবচেয়ে বেশি আঘাত পেয়েছে। অনেক নারী নিজের নাম পর্যন্ত জানত না—সমাজ থেকে যে বিচ্ছিন্নতা তৈরি হয়েছিল তা ছিল ভয়ংকর বাস্তবতা। রোকেয়া শত বছর আগেই নারীর শিক্ষা ও উপার্জনের ক্ষমতা বাড়ানোর কথা বলেছিলেন; কিন্তু সমাজ তা পুরোপুরি ধারণ করতে পারেনি।

মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, দেশের শিক্ষাঙ্গনে এখন মেয়েদের উপস্থিতি ব্যাপক হলেও সুযোগ-সুবিধায় বৈষম্য রয়ে গেছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদাহরণ তুলে তিনি বলেন, শিক্ষার্থীর সংখ্যায় ছেলে-মেয়ে সমান হলেও মেয়েদের হলে সংখ্যা মাত্র পাঁচটি, আর ছেলেদের হল ১৩টি—এটি সমতা-বিরোধী।

নারীদের নেতৃত্বেই নতুন বাংলাদেশ গড়ে উঠতে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, গণ-অভ্যুত্থানে নারীরা যে নেতৃত্ব দিয়েছে, তা দেশের জন্য নতুন দিগন্ত তৈরি করেছে। তাই নারী সমাজকে সামনের সারিতে রেখে অগ্রযাত্রা নিশ্চিত করতে হবে।

অনুষ্ঠানে তিনি ঘোষণা দেন যে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের নাম পরিবর্তন করে ‘নারী ও শিশু মন্ত্রণালয়’ করা হবে।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন নারী ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ। স্বাগত বক্তব্য দেন সিনিয়র সচিব মমতাজ আহমেদ। প্রধান উপদেষ্টা এ বছর বেগম রোকেয়া পদকপ্রাপ্ত চারজন নারীর হাতে পদক তুলে দেন—রুবানা রাকিব, কল্পনা আক্তার, নাবিলা ইদ্রিস ও ঋতুপর্ণা চাকমা।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Deen Md

১০০ বছর পরও আরেকজন বেগম রোকেয়া সৃষ্টি করতে পারিনি : প্রধান উপদেষ্টা

Update Time : ০৪:০৪:২৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৯ ডিসেম্বর ২০২৫

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, এক শতাব্দী পরও বেগম রোকেয়ার মতো আরেকজন নেতৃস্থানীয় নারী চিন্তাবিদ তৈরি করতে না পারা জাতির দুর্ভাগ্য। তিনি বলেন, রোকেয়া যে স্বপ্ন ও দিকনির্দেশনা দিয়ে গেছেন, তা বাস্তবে রূপ দিতে সমাজ এখনও সক্ষম হয়নি।

মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বেগম রোকেয়া দিবস ২০২৫ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, রোকেয়ার জন্মবার্ষিকীর আয়োজন শুধু স্মরণ নয়, আমাদের ব্যর্থতা খুঁজে বের করার সুযোগ। কেন শত বছরেও রোকেয়ার মতো আরও কেউ সমাজকে ঝাঁকুনি দিয়ে জাগিয়ে তুলতে পারেনি, সেটি ভাবার সময় এসেছে।

তিনি ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষের কথা স্মরণ করে বলেন, সেই সময় নারীরা সবচেয়ে বেশি আঘাত পেয়েছে। অনেক নারী নিজের নাম পর্যন্ত জানত না—সমাজ থেকে যে বিচ্ছিন্নতা তৈরি হয়েছিল তা ছিল ভয়ংকর বাস্তবতা। রোকেয়া শত বছর আগেই নারীর শিক্ষা ও উপার্জনের ক্ষমতা বাড়ানোর কথা বলেছিলেন; কিন্তু সমাজ তা পুরোপুরি ধারণ করতে পারেনি।

মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, দেশের শিক্ষাঙ্গনে এখন মেয়েদের উপস্থিতি ব্যাপক হলেও সুযোগ-সুবিধায় বৈষম্য রয়ে গেছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদাহরণ তুলে তিনি বলেন, শিক্ষার্থীর সংখ্যায় ছেলে-মেয়ে সমান হলেও মেয়েদের হলে সংখ্যা মাত্র পাঁচটি, আর ছেলেদের হল ১৩টি—এটি সমতা-বিরোধী।

নারীদের নেতৃত্বেই নতুন বাংলাদেশ গড়ে উঠতে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, গণ-অভ্যুত্থানে নারীরা যে নেতৃত্ব দিয়েছে, তা দেশের জন্য নতুন দিগন্ত তৈরি করেছে। তাই নারী সমাজকে সামনের সারিতে রেখে অগ্রযাত্রা নিশ্চিত করতে হবে।

অনুষ্ঠানে তিনি ঘোষণা দেন যে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের নাম পরিবর্তন করে ‘নারী ও শিশু মন্ত্রণালয়’ করা হবে।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন নারী ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ। স্বাগত বক্তব্য দেন সিনিয়র সচিব মমতাজ আহমেদ। প্রধান উপদেষ্টা এ বছর বেগম রোকেয়া পদকপ্রাপ্ত চারজন নারীর হাতে পদক তুলে দেন—রুবানা রাকিব, কল্পনা আক্তার, নাবিলা ইদ্রিস ও ঋতুপর্ণা চাকমা।